কাঁচা কাঁঠালের আচার তৈরির রেসিপি!

কাঁচা কাঁঠালের নিজস্ব একটা স্বাদ আছে, আর সেটা যখন সরিষার তেলের সাথে পাঁচফোড়ন আর নানান মশলার মিশেলে আচারে পরিণত হয়, তখন তার স্বাদ হয় অসাধারণ। বিশেষ করে যারা একটু ভিন্ন স্বাদের আচার পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই কাঁঠালের আচার হতে পারে এক নতুন আবিষ্কার। গরম ভাতের সাথে একটুখানি কাঁঠালের আচার, অথবা শীতের দুপুরে রুটির সাথে এই মুখরোচক আচার – ভাবলেই মনটা ভরে ওঠে। তাহলে আর দেরি কেন? 

চলুন, এই চমৎকার কাঁঠালের আচার তৈরির অভিযানে নেমে পড়া যাক! নিচে এর উপকরণ এবং রান্নার বিস্তারিত প্রণালী দেওয়া হলো, যা অনুসরণ করে আপনিও তৈরি করতে পারবেন এই সুস্বাদু আচার।

কাঁচা কাঁঠালের আচার তৈরিতে যে উপকরন লাগবে

আরও দেখুনঃ কাঁচা কাঁঠালের কোফতা তৈরির রেসিপি

কাঁচা কাঁঠালের আচার রান্নার প্রণালী

• প্রথমে কাঁঠালের খোসা ও ভেতরের অংশ ফেলে দিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। কাঁঠাল কাটার সময় হাতে তেল মেখে নিলে আঠা লাগবে না।
• এরপরে, কাঁঠালের টুকরোগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর সামান্য হলুদ ও লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন।
• একটি বড় পাত্রে পানি ফুটিয়ে কাঁঠালের টুকরোগুলো দিয়ে দিন। ৫-৭ মিনিট মাঝারি আঁচে ভাপিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন খুব বেশি সেদ্ধ না হয়ে যায়।
• ভাপানো কাঁঠালের টুকরোগুলো একটি ছাঁকনিতে ঢেলে পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর একটি পরিষ্কার কাপড়ের উপর ছড়িয়ে দিন, যাতে অতিরিক্ত পানি শুকিয়ে যায়। আপনি চাইলে কিছুক্ষণ রোদেও শুকাতে পারেন।
• একটি কড়াইতে সরিষার তেল গরম করুন। তেল হালকা গরম হলেই হবে, তেল থেকে ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত গরম করার প্রয়োজন নেই।
• গরম তেলে শুকনো মরিচ ও পাঁচফোড়ন দিয়ে কয়েক সেকেন্ড ভেজে নিন। সুন্দর একটা গন্ধ বের হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিন।
• পেঁয়াজ হালকা বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এরপর আদা বাটা ও রসুন বাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন যতক্ষণ পর্যন্ত কাঁচা গন্ধ চলে না যায়।
• এবার হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো (যদি ব্যবহার করেন), ধুনিয়া গুঁড়ো ও জিরা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মশলা যেন পুড়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। প্রয়োজনে সামান্য পানি দিতে পারেন।
• এরপরে রাই সরিষা বাটা দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
• ভাপানো ও শুকনো করে রাখা কাঁঠালের টুকরোগুলো কড়াইতে দিয়ে মশলার সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
• লবণ ও চিনি দিয়ে দিন। ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে দিন এবং মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন।
• সবশেষে ভিনেগার দিয়ে দিন এবং আরও ২-৩ মিনিট রান্না করুন। ভিনেগার আচারটিকে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে সাহায্য করবে।
• আচার ঘন হয়ে এলে এবং কাঁঠালের টুকরোগুলো নরম হয়ে এলে চুলা বন্ধ করে দিন।
• আচার পুরোপুরি ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি কাঁচের বয়ামে ভরে নিন। খেয়াল রাখবেন বয়াম যেন শুকনো ও পরিষ্কার হয়।

ব্যস! তৈরি হয়ে গেল আপনার জিভে জল আনা কাঁঠালের আচার। এই আচার ভাত, রুটি, খিচুড়ি কিংবা এমনিতেও খেতে দারুণ লাগে।

কিছু টিপস

• আচারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য সামান্য আখের গুড় ব্যবহার করতে পারেন।
• দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য আচারটিকে মাঝে মাঝে রোদে দিন।
• সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো চামচ ব্যবহার করুন আচার বের করার জন্য।

আশা করি এই রেসিপি আপনাদের ভালো লেগেছে। বাড়িতে অবশ্যই একবার বানিয়ে দেখবেন এবং জানাবেন কেমন লাগলো! এছাড়া অন্য কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!